বাংলাদেশে গুজবের প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে সরকার একটি বিশেষ সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
এই সেলের মূল দায়িত্ব হবে গণমাধ্যমে এবং ফেসবুক, টুইটার বা ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যেসব গুজব ছড়ানো হয় তার উৎস অনুসন্ধান করা এবং তথ্য যাচাই-বাছাই করে আসল ঘটনা জনসাধারণকে জানিয়ে দেয়া।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসিকে বলেন, “আমরা লক্ষ্য করছি সামাজিক মাধ্যমে একটি বিশেষ চক্র, বিশেষভাবে সাম্প্রদায়িক চক্র, যুদ্ধাপরাধী চক্র, ক্রমাগতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে।”
“এটা সমাজে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে, অবিশ্বাস তৈরি করছে এবং সংঘর্ষের উস্কানি দিচ্ছে।”
মি. হক বলেন, এজন্যই সরকার মনে করছে গুজবের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে সতর্ক করা এবং সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
এর কোন কোনটিতে কয়েকজন ছাত্রকে খুন এবং কিছু ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে দাবি করা হয়।
পর এসব দাবি স্রেফ গুজব বলে জানা যায়।
যেভাবে কাজ করবে গুজব-বিরোধী সেল
তথ্যমন্ত্রী জানাচ্ছেন, এই সেল গঠিত হবে দক্ষ জনশক্তি দিয়ে।
গণমাধ্যমে কিংবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যেসব গুজব ছড়িয়ে পড়ছে, এই সেল সেগুলো তা সনাক্ত করবে, গুজবের উৎস অনুসন্ধান করবে, গুজবের বিষয় সনাক্ত করবে, এবং এ ব্যাপারে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে জনসাধারণকে জানিয়ে দেবে।
এসব গুজবের বিষয়ে প্রয়োজনবোধে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকেও জড়িত করা হবে বলে জানান হাসানুল হক ইনু।
এই গুজব-বিরোধী সেলকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহারের সম্ভাবনা সম্পর্কে মি. হক বলেন, “এরকম কোন আশঙ্কা নেই।”
“কোন ব্যক্তি যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিস-ইনফরমেশন এবং ডিস-ইনফরমেশন ছড়ায়, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে তাকে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী তার দায়িত্ব নেবে না।”
সরকার যাকে গুজব বলবে, ফেসবুক-টুইটার ব্যবহারকারীরা তাকে কেন সত্যি বলে মনে নেবে, এই প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পুরো বিষয়টা নির্ভর করবে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ওপর।
“কোন একটি বিষয়ে মিথ্যাচার করা হলে সরকার, কর্তৃপক্ষ বা কোন সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে গুজব পল্লবিত হয়,” তিনি বলেন, “সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে পারলেই মানুষ তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।”
তথ্যমন্ত্রী জানান, আপাতত তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই সেল গঠিত হবে এবং পরে এতে বিশেষজ্ঞরাও যোগ দেবেন।
ঢাকায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলার সময় ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলম এবং মডেল ও অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে গ্রেফতার করে।
পরে নওশাবা আহমেদ জামিনে মুক্তি পেলেও তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় মহিদুল আলম এখনও আটক রয়েছেন।
সূত্র, বিবিসি